বিশেষ প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের সবচেয়ে উচ্চতার সেই নূরে আলম ‘হত্যাকাণ্ডের’ এক মাস পেড়িয়ে গেলেও এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এতে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সোমবার (১৮ মার্চ) নূরে আলমের হত্যা মামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।
সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দুল্লার বাজার এলাকায় নূরে আলম হত্যা মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসী।
নূরে আলম ওই এলাকার মৃত নওশের আলীর ছেলে। স্থানীয়রা তাকে লারকা নামেই চেনেন। তিনি স্থানীয় কাকিনা বাজারে নরসুন্দরের কাজ করতেন।
এদিকে দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করলে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম ।
পরে আসামি গ্রেফতার ও নিহতের স্ত্রীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলে মানববন্ধন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
মানববন্ধনে কান্না জড়িত কন্ঠে নূরে আলমের স্ত্রী তাহমিনা বলেন, দুধের শিশুকে নিয়ে আমি থানাসহ পুলিশের কাছে ঘুরছি। কিন্তু আসামি ধরার কথা বললেও তারা কোনো কথা বলছে না। বিচার না পেয়ে আজ আমি রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমি দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে নুর আলমের মা বলেন, বাজারে সেলুনে সে নরসুন্দরের কাজ করত। কখনো কারো সঙ্গে ঝগড়া করেনি। কিন্তু আমার ছেলেকে চোরের অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করেছে। এ ব্যথা সইতে না পেরেই সে মারা যায়। আমি এর বিচার চাই।
এ অবস্থায় পরিবার কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলেও এখনো আসামিদের গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার কাকিনা বাজারে সেলুনের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির পাশে দুল্লার বাজারে একটি মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেন নূরে আলম। পরে ৩০ মিনিটের মতো সেখানে অপেক্ষা করে কাউকে দেখতে না পেয়ে সেই মোটরসাইকেলটি বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরের দিন সকালে গাড়ির মালিক আসাদুল মোটরসাইকেলটি নিতে তার বাসায় যান এবং তাকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দেন। পরে কৌশলে তাকে দুল্লার বাজার ক্লিনিকের সামনে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং তাকে দেওয়া সেই ৫ হাজার টাকা কেড়ে নেন। এ ঘটনার জেরে রাগে-অভিমানে নূরে আলম বাজার থেকে বিষ কিনে বাসায় গিয়ে আত্মহত্যা করেন।