শাহরিয়ার সুমনঃ
বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের অভিযানে আস্হা মাল্টিপারপাস সার্ভস লিমিটেড নামে অবৈধ প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজনকে আটক করেছে। অসংখ্য শ্রমজীবি মানুষের নিকট ঋণ দেওয়ার কথা বলে সহজ সরল মানুষদের প্রলোভিত করে ফাঁদে ফেলে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারণামূলকভাবে আত্নসাতের অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার সহ ১২৭টি সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই এবং ৫৭৬টি সদস্য আবেদন ফরম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অত্র মামলার বাদীনি একজন গৃহিনী। বর্ণিত অভিযুক্তদ্বয়সহ এজাহারনামী অপর পলাতক অভিযুক্তরা গত ১৯/০৪/২০২৪ইং তারিখে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অক্সিজেন কুয়াইশ রোড, তারেক বিল্ডিং এর ৫ম তলায় আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড নামীয় একটি বে-সরকারী এনজিও এর অফিস খুলে বিগত ০১ (এক) মাস পূর্বে বাদীর নিকট গিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাইয়া অভিযুক্তদের এনজিও’র সদস্য হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয় এবং বাদীনিকে আরো সদস্য সংগ্রহ করার জন্য বলে। বাদী অভিযুক্তদের কথা সরল মনে বিশ্বাস করিয়া বাদীর সংগ্রহকৃত সদস্য ১। রাবেয়া সুতলানা, ২। মমনা, ৩। সামশুনাহার, ৪। আয়েশা, ৫। বেবি, ৬। ললিতা, ৭। রহিমা, ৮। খোকন দেরকে উক্ত এনজিওতে সদস্য হওয়ার জন্য প্রস্তাব করে। বাদীর কথা তারা বিশ্বাস করে গত ১ মাস পূর্বে উক্ত এনজিওতে গিয়ে ১-৪নং অভিযুক্তদের সাথে কথা বললে তাহারা জানায় যে, এককালিন ১০,০০০/- টাকা সঞ্চয় জমা দিলে ০৭ (সাত) দিনের মধ্যে ১,০০,০০০/- টাকা এবং এককালিন ২০,০০০/- টাকা সঞ্চয় জমা দিলে ২,০০,০০০/- টাকা ঋণ দিবে। এছাড়াও এনজিও সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হইলে তাহাদের চিকিৎসা ভাতা দেওয়া সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিদা প্রদান করবে। অভিযুক্তদের কথা বিশ্বাস করে বাদীসহ তাহার সংগ্রহকৃত সদস্যরা প্রত্যেকে উক্ত এনজিওতে ২০০/- টাকার বিনিময়ে সদস্যপদ গ্রহণ করে। ভুক্তভোগীদের সদস্য হওয়ার পর তাদেরকে একটি সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই প্রদান করে। বাদী ও বাদীর সংগ্রহকৃত ভুক্তভোগীরা সর্বমোট ১,১৫,০০০/- টাকা জামানত হিসাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে। অভিযুক্তদের জামানত প্রদান করার পর ২-৩নং অভিযুক্তরা জানায় সদস্যদের সঞ্চয় ও ঋণ পাশ বইতে কাজ আছে বলিয়া নিয়ে যায় এবং অভিযুক্তরা জানায় ১৮/০৫/২০২৪ইং তারিখ ঋণ দেওয়া হবে। বাদী ও বাদীর সংগ্রহকৃত সদস্যরা ১৮/০৫/২০২৪ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় উক্ত এনজিও অফিসে গিয়ে দেখে অফিস বাহির হইতে তালাবদ্ধ। পরবর্তীতে লোকমুখে বাদী জানতে পারেন যে, অভিযুক্তরা তাহাদের মতো ঋণ দিবে বলিয়া অনেকের নিকট হইতে টাকা গ্রহণ করে। ঋণের টাকা না দেওয়ায় ১ ও ২নং অভিযুক্তদেরকে ভুক্তভোগীরা আটক করিয়া বায়েজিদ বোস্তামী থানায় নিয়ে গিয়াছে। বায়েজিদ বোস্তামী থানায় আসিয়া ১ ও ২নং অভিযুক্তকে সনাক্ত করা সহ বাদীর সঙ্গীয়দের সাথে আলোচনা করে জানতে পারেন যে, তাহাদের নিকট সহ আরো অনুমান ২৫০/৩০০ জনের নিকট হইতে আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেডের সদস্য ফিসহ বিভিন্ন অংকের জামানত হিসাবে টাকা গ্রহণ করিয়া ঋণ না দিয়ে ৩ ও ৪নং আসামী টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়াছে মর্মে বাদী এজাহার দায়ের করেন। বাদীর উক্তরূপ এজাহারে প্রেক্ষিতে সূত্রোক্ত মামলা রুজু হয়।
মামলাটির তদন্তভার এসআই/মোঃ মনিরুল ইসলাম এর নিকট অর্পন করা হয়। এসআই/মোঃ মনিরুল ইসলাম মামলার প্রাথমিক তদন্তকালে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত ১। মেহেদী হাসান সবুজ (৩৫),২। মোঃ জাফরুল হাসান খান (২৮)দ্বয়সহ এজাহারনামীয় পলাতক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া। উক্ত অভিযুক্তদ্বয়সহ এজাহারনামীয় অপর অভিযুক্তরা গত ১৯/০৪/২০২৪ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকা হইতে ১৮/০৫/২০২৪ইং সকাল অনুমান ০৯.০০ ঘটিকা পর্যন্ত মামলার ঘটনাস্থলে আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড নামীয় অফিস খুলিয়া বাদী সহ অনেক অসহায় নিরীহ মানুষের নিকট গিয়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা করার প্রলোভনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেখাইয়া বিশ্বাস অর্জন করিয়া ঋণ দিবে বলিয়া বাদী ও বাদীর সংগ্রহকৃত সদস্যদের নিকট হইতে ১,১৫,০০০/- টাকা এবং আরো বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের নিকট হইতে জামানত ও সঞ্চয়ের অনুমান ২৫,০০,০০০/- (পঁচিশ লক্ষ) টাকা আত্মসাৎ করিয়াছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ অভিযান পরিচলানা করিয়া অক্সিজেন কুয়াইশ লিংকরোডস্থ তারেক বিল্ডিংয়ের ৫মতলায় আস্থা মাল্টি পারপাস সার্ভিস লিঃ এর অফিসের ভিতর হইতে ১২৭টি আস্থা মাল্টি পারপাস সার্ভিস লিঃ নামীয় সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই এবং ৫৭৬টি আস্থা মাল্টি পারপাস সার্ভিস লিঃ নামীয় সদস্য আবেদন ফরম ২নং অভিযুক্ত মোঃ জাফরুল হাসান খান (২৮) এর দেখানোমতে উপস্থিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন । জব্দকৃত ১২৭টি আস্থা মাল্টি পারপাস সার্ভিস লিঃ নামীয় সদস্য ও ঋণপত্র পাস বই প্রতিটি গ্রহকের নিকট থাকার কথা স্বত্ত্বে তা না করিয়া উপরোক্ত এজাহার নামীয় অভিযুক্তদ্বয় কৌশলে প্রতারণা করিয়া তাদের নিজ দখলে রাখিয়া দেয়।
এই সংক্রান্তে বায়েজিদ বোস্তামী থানার মামলা নং-৩১, তাং-১৮/০৫/২০২৪ ইং, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু হয়। মামলাটি তদন্তাধীন।
গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তর নাম ও ঠিকানাঃ
১। মেহেদী হাসান সবুজ (৩৫), পিতা-হালিম হাওলাদার, মাতা-মাহমুদা বেগম, সাং-চর হবলা বুনিয়া, হাওলদার বাড়ী, থানা-মোড়লগঞ্জ, জেলা-বাগেরহাট, বর্তমানে-বন্দর টিলা, আজম বিল্ডিং ২য় তলার ৩নং রুমের ভাড়াটিয়া, থানা-ইপিজেড, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমান-২-আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, অক্সিজেন কাঁচাবাজারের ভিতরে তারেক বিল্ডিং এর ৫ম তলা, থানা-বায়েজিদ বোস্তামী, জেলা-চট্টগ্রাম, ২। মোঃ জাফরুল হাসান খান (২৮), পিতা-মোঃ আসলাম হোসেন খান, মাতা-মোছাম্মৎ লুৎফুর নেছা, সাং-চালিতাবুনিয়া, খান বাড়ী, থানা-সরণখোলা, জেলা-বাগেরহাট, বর্তমানে- আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড এর ম্যানেজার, অক্সিজেন কাঁচাবাজারের ভিতরে তারেক বিল্ডিং এর ৫ম তলা, থানা-বায়েজিদ বোস্তামী, জেলা-চট্টগ্রাম ।
WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024
Leave a Reply