ফজল উদ্দিন ছাতক প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ-বিনন্দপুর সড়কের বটেরখাল নদীর তীরবর্তী কাঁচারবাড়ি নামক স্থানে পৃথক দুটি ভাঙন দেখা দেয় ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায়। এ ভাঙনের কারণে চরম দূর্ভোগে পড়েন এলাকার ১৫-২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। বিশেষ করে স্কুল কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ মুমুর্ষ রোগিদের যাতায়াতে ভূগান্তির যেন শেষ নেই। মানুষের এ দীর্ঘ ভূগান্তির লাঘবে কোন জনপ্রতিনিরা এগিয়ে না আসায় যাতায়াতে দু'টি ভাঙনে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে প্রসংসায় ভাসছেন কয়েকজন উদ্যোক্তা।
সরজমিন গত সোমবার নির্মানাধিন বাঁশের সেতু দু'টি দেখতে গিয়ে দেখা হয় মূল উদ্যোক্তা, স্থানীয় গোবিন্দনগর কোনাপাড়া গ্রামের মৃত নুর গণির ছেলে, গোবিন্দগঞ্জ বাজারের ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ী আলী হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, কাঁচারবাড়ি নামক স্থানে দু'টি ভাঙনের ফলে এলাকার মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। ওয়ার্ড মেম্বার থেকে শুরু করে স্থানীয় সংসদ সদস্য পর্যন্ত কোন জন প্রতিনিধিরা এগিয়ে আসেননি। অবশেষে তিনি এলাকার সাবেক মেম্বার শামছুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবদুল মুহিত শাকিল ও মকবুল হোসেনের সহযোগিতা নিয়ে এ ভাঙনে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
৮জন শ্রমিক নিয়ে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সাড়ে ৩শ' থেকে ৪শ' বাঁশ সংগ্রহ করেন। বাজার থেকে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের সামগ্রী ক্রয় করে শুরু করেন নির্মাণ কাজ। সোমবার সেতুর কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হলে এলাকার মানুষ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন।
বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলকারীরা জানান, দশঘর, গোবিন্দনগর, ভটেরগাঁও, হরিনগর, হাওলী, শ্যামনগর, কৃঞ্চনগর, মালিকান্দি, বিশ্বম্ভরপুর, লক্ষীপুর, বিনন্দপুর, একানিধা সিংগুয়া, বিলপারসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় লাখো মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। তারা গুরুত্বপূর্ন এ রাস্তার ভাঙন দু'টি মেরামতে জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
গোবিন্দগঞ্জের ব্যবসায়ী, সাঁকো তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা আবদুল মুহিত শাকিল বলেন, বাঁশের সাঁকোটি প্রায় ৫শ' ফুট দৈর্ঘ্য। দেখতে সাঁকোটি সেতুর মতো। স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকোটি তৈরি করা হয়েছে। একই বক্তব্য দেন উদ্যোক্তা সাবেক মেম্বার শামছুল ইসলাম।
দশঘর গ্রামের বাসিন্দা, নোয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজ্জাদ আহমেদ বলেন, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় কাঁচারবাড়ি নামক এ স্থানে পৃথক দু'টি ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে মেরামতের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। মানুষ চলাচলের জন্য যারা বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে দিয়েছেন তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।