নিউজ ডেস্কঃ
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলেই থাকবে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা।
এ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা রিভিউ আবেদন
(২০অক্টোবর ২০২৪) রোববার পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেছে আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ ছয় বিচারপতির বেঞ্চে রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়। প্রায় সাত বছর পর ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হয়। একইসাথে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ থেকে বাতিল দুই থেকে আট উপ-অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করে রায় দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
এ রায়ের ফলে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ই বহাল থাকলো। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আপিল বিভাগে শুনানি করেন।
রায়ের পরে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, এ রায়ের ফলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলেই বিচারপতিদের অপসারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনজন বিচারপতিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারিক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখলেও তাদের বিষয়ে কোন তদন্ত হয় নি। এ বিষয়টি উল্লেখ করলে মি. আসাদুজ্জামান বলেন, তিনজন বিচারপতিকে কেন ঝুলিয়ে রেখেছিলেন, এটা ওনারা বলতে পারবেন। আমি সমালোচক হিসেবে বলতে পারি ওনারা এটা অসাংবিধানিক কাজ করেছেন। তাদের এবং ১২ জন বিচারপতির বিষয়েও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলেই সিদ্ধান্ত হবে।
এ রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের যে কোন অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। এর আগে গত ১৬ই অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া 'দলবাজ' ও 'দুর্নীতিবাজ' বিচারপতিদের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হাইকোর্ট ঘেরাও এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
তাদের দাবির মুখে ওই দিনই হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতিকে আপাতত বেঞ্চ না দেয়া অর্থাৎ বিচারিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। সেই সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট হয়। পরে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেয়।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ২০১৭ সালের চৌঠা জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ওই বছরই রায় দেয় আপিল বিভাগ।
একই বছর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বহাল চেয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।