বনবিভাগের DFO রফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ (বেয়াদব রফিক) তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে সরকারি মালামাল ও গাছপালা চুরি করে বিক্রি করে কোটিকোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন।বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ
‘এফএসটিআই’ অর্থাৎ ফরেস্ট্রী সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি ইনস্টিটিউট’র পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
এঅবস্থায় কনস্ট্রাকশন সেকশন সহ বিভিন্ন ট্রেনিং এর জন্য বরাদ্দ হওয়া টাকা থেকে দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। সরকারি পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা সত্বেও শিক্ষানবিশ ফরেস্ট সদস্যদের নিম্নমানের খানা দিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ফরেস্ট কর্মকর্তা ও সদস্য সূত্রে জানা যায়।
এর আগে, ২০০৭-৮ ও ৯ সালে কক্সবাজার সাউথ ডিভিশনে থাকা অবস্থায় লিং রোডের মুখে প্রতিরাতে অবৈধভাবে কাঠ পাচার করেছিল। স্থানীয় চট্টগ্রাম সাতকানিয়ার ছেলে হওয়ায় পাছারকৃত কাঠের গাড়ি প্রতি মোটা অংকের টাকা নিতেন তিনি।
সেসময় কাঠ ব্যবসায়ী নুরুল আলম এর কাছথেকে চুরি করে বিক্রি করা টাকা নিতে গেলে নুরুল আলম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে অশ্লীল ভাসায় গালিগালাজ করলে স্থানীয় লোকজন এসে DFO রফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে গণধোলাই দেয়, যা তৎকালীন কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা দিয়ে মুক্ত করে অফিস হেফাজতে নিয়ে যায়।
সেসময় তাঁর এই খবর স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় নিউজও করা হয়। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করলে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই বলে একটি সুত্র থেকে জানা যায়।
এরপর সে আরও বেপরোয়া দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে যায়। এবং CRPRP দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প বনায়ন করার কথা থাকলেও বনায়ন না করে ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে, যা বিভাগীয় অর্থদণ্ডপূর্বক অপরাধী হিসেবে প্রমাণ হয়।
শুধু তাই নয় বিশেষ সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদেরকে ২ কোটি টাকা দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে DFO পদে পদোন্নতি নিয়ে হবিগঞ্জের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।
শুরু হয় দুর্নীতির মহোৎসব। হবিগঞ্জে বিভাগীয় অফিসের বাউন্ডারি, DFO বাসভবন, স্টাফ ব্রাক, ইলেকট্রিক লাইনসহ অন্যান্য প্রকল্প থেকে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। কাজের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় তা ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানা যায়। হবিগঞ্জে থাকা অবস্থায় S.R.C.W.P প্রকল্পের বরাদ্দকৃত ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ভূয়া টিএ বিল, জ্বালানি বিল এবং বন্যপ্রাণী উদ্ধারের নামে বুয়া বিল সহ অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয়ের নামে আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
তিনি লামা বনবিভাগে থাকাকালীন সদর, তৈইন, ডলুছড়ী সহ বিভিন্ন রেঞ্জে কাঠ ব্যবসায়ীদেরকে পাশে রেখে খাড়া গাছ বিক্রির মহোৎসব চালিয়ে যায়! তখন কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি প্রমাণিত হয়। তৎকালীন সিএফ একাধিকবার কৈফিয়ৎ তলব করলেও রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, প্রকাশ (বেয়াদব রফিক) কোন কর্ণপাত করে নাই। কারণ তাঁর পাশে বড় বড় রাঘব বোয়ালেরা ছিল ৷
রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে ঐসব আত্মসাৎকৃত ও দুর্নীতির টাকা তৎকালীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী মন্ত্রী হাসান মাহমুদকে ২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগে পোস্টিং নেয়। শুরু হয় দুর্নীতির আরেক ধাপের মহোৎসব ও সিন্ডিকেট।
জানা যায়, সেই সিন্ডিকেট সদস্য ছিল (১) তার বন্ধু তৎকালীন এসিএফ বর্তমান ডিএফও কাজল তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ( ২) প্রহ্লাদ চন্দ্র রাই (৩) রেঞ্জ কর্মকর্তা সরোয়ার জাহান ও সাইফুল ইসলাম। এদের মাধ্যমে পুরো চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসছিল এবং হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করা হয়েছে বলে তথ্যসূত্রে জানা যায় ।
বিশেষ করে রাঙ্গুনিয়ান রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে শেখ রাসেল এ্যভিয়ারি পার্কের ক্যাবলকার মেরামত ও অন্যান্য প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত ৩০ কোটি টাকা মন্ত্রী হাসান মাহমুদকে নিয়ে কাজ না করে সব টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
রাঙ্গুনিয়া কুরুসিয়া রেঞ্জের বিভিন্ন বিটের মাদারট্রি গর্জন গাছ,সেগুন, চম্পাফুল, চাপালিশ সহ মূল্যবান গাছ মন্ত্রীর ভাই এরশাদ মাহমুদের কাছে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পানির দরে বিক্রি করে থাকে এবং প্রায় ৪০ হেক্টরের মতো জায়গা এরশাদ মাহমুদকে দখল করতে সাহায্য করে যা গত ৩৬ শে জুলাই সরকার পরিবর্তনের পরে বর্তমান সিএফ মহোদয় সমস্ত দখলকৃত জায়গা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
আবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সব বিটে মাদার ট্রি গাছ কেটে সুফল প্রকল্পের বনায়নের নামে চলে হরিলোড় সব জায়গা থেকে টাকা আর টাকা স্থানীয় DFO হওয়াই কোন ব্যক্তিকে পাত্তাই দিচ্ছিলেননা তিনি। দুর্নীতির টাকা দিয়ে নিজে ও নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজনদেরকে মূল্যবান জায়গা ক্রয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করে দেয় যা তদন্ত করলে প্রমাণিত হবে। সব DFO দুই বছরের অধিক চাকরি করলেও রফিকের দুর্নীতিতে সবাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগ থেকে ফরিদপুর ডিভিশনে বদলি করা হয়েছিল।
এদিকে ফরিদপুরে কিছুদিন যেতে না যেতে রাজবাড়ি সড়কের ৭০/৮০ বছরের মাদারট্রি মেহগনি গাছ পানির দরে বিক্রি করে দেয় বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হলেও সরকার ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেছেন তিনি। স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বারবার নিউজ হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নিতে পারেননি বনবিভাগ।
অন্যদিকে চর্মমুগিয়া ইকোপার্কের মাটি ভরাট ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে চট্টগ্রাম জিইসির পাশে তার এক আত্মীয় ঠিকাদারের নামে আত্মসাৎ করে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে তৎকালীন আওয়ামীলীগ মন্ত্রী শাহাবুদ্দিনের ছেলে জুম্মনকে নগদ ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে পোস্টিং এ এসে নতুন করে শুরু হয় দুর্নীতির বাণিজ্য।
ডুলা হাজার সাফারি পার্কের জন্য বরাদ্দ দিল ১ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা যা তার নিকটাত্মীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরেস্ট রেঞ্জার মাজাহার সহ আত্মসাৎ করেন বলেও জানা যায়। প্রায় ৭০ টিরও বেশি টেন্ডার জ্বালিয়তি করেছিল যা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত টিম গঠন করা হলেও তদন্ত টিমকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে দামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
তাঁর জ্বালিয়াতির ভুয়া নামের ঠিকাদারীর প্রতিষ্ঠান করে বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয় ও সরবরাহ করা বন্যপ্রাণীর চিকিৎসা করার নামে টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। যা তদন্ত করলে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হবে বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বনবিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগন।
জানা যায়, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ বেয়াদব রফিক তাঁর এইসব দোষ চাপানোর চেষ্টা করে নুরজাহান ও দিপাম্ভসিতা এদের উপর। এছাড়াও বিভিন্ন রেঞ্জের সুফল বনায়নের টাকা আত্মসাৎ করে বারবার প্রমাণ পাওয়ার পরেও কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই বলে বিশেষ সূত্র থেকে জানা যায়।
এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য DFO রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024
Leave a Reply