সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে খালেদ মিয়া হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ( ৬ জুলাই ) রোববার দুপুরে জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের উত্তর কালনীরচর বাজারে স্থানীয় প্রতিবাদী জনতার উদ্যোগে মানববন্ধন ও সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, উত্তর কালনীরচর বাজারে একটি দোকানভিট নিয়ে বিরোধ ছিল বিএনপিপন্থি আবদুল হক, ছানু মিয়া ও লোকমান মিয়া এবং আ.লীগপন্থি জুনাইদ আহমদ, আকাইদ মিয়া বিলাল মিয়া, মেন্দি মিয়া ও প্রবাসী করিম মিয়ার মধ্যে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছিল। মামলায় আদালতের রায়ে ভ্রাম্যমান আদালত আ.লীগপন্থিদের উচ্ছেদ করে বিএনপিপন্থিদের দখল বুঝিয়ে দেন।
এ ঘটনার জের ধরে গত ৩১ মে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আ.লীগপন্থিদের হামলায় ঘটনাস্থলেই বিএনপিপন্থি পক্ষের খালিদ মিয়া (৪০) নৃশংসভাবে খুন হন এবং প্রায় ৩৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই শুক্কর আলী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৯৮ জনকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলায় দায়ের করেন। মামলা-০১। তারিখ-০৩/০৬/২০২৫ইং। মামলায় এ পর্যন্ত ৭ আসামী গ্রেফতার হলেও অন্য আসামীরা দিনের বেলায় পালিয়ে থাকে এবং রাতের বেলায় এলাকায় অবস্থান করে তারা নিজে নিজের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও ঘরের মালামাল সরিয়ে পাল্টা কাউন্টার মামলা করছে। শুধু তাই নয়, মামলার বাদীপক্ষের লোকদের নানাভাবে প্রাণে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য সম্প্রতি বিএনপিপন্থি হাজী লোকমান মিয়ার বাড়িতে বিস্ফোরক জাতীয় কিছুর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আসামীপক্ষের লোকজন বলে দাবি করা হয়। সভায় বক্তারা নিরহ ব্যক্তি খালিদ মিয়ার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এতে বক্তব্য রাখেন, প্রতিবাদী আলাউর রহমান ইয়াওর, কুবাইব আহমেদ সিজুল, হোসেন মিয়া, রুহেল মিয়া ও নিহতের ভাই মোহন মিয়া প্রমূখ। এতে ছইল মিয়া, আবদুল মমিন, বশির উদ্দিন, খসরু মিয়া, আবদুল গফ্ফার, রশিদ মিয়া, কাহেল মিয়া, খলকু মিয়া, খালেদ মিয়া, লুৎফুর রহমান, জামিল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, মুর্শেদ আহমদ, তুরন মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, সেবুল মিয়া, জলাল মিয়া, দিলোয়ার হোসেন, রাশেদ মিয়া, রিয়াইছ মিয়া, হালিম মিয়া, ইমন মিয়া, খালিফুর মিয়া, শফিকুল ইসলাম, আহবাবুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, হারুন মিয়া, মিছলু মিয়া, মোস্তফা মিয়া, গফ্ফার মিয়া, আতাউর রহমান, দরছ মিয়া সহ স্থানীয় প্রতিবাদী জনতা অংশ গ্রহণ করেন। পরে নিহতের বাড়িতে গেলে নিহত খালিদ মিয়ার মা পুত্রশোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং খুনিদের ফাসির দাবি জানান। নিহত খালিদ মিয়ার অবুঝ ৪ সন্তান সহ তার স্ত্রী স্বামী হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, এখনো বাচ্চারা তাদের বাবার জন্য কাঁদে। তাদের বাবা কোথায় জানতে চায়। আমি উত্তর দিতে পারিনা। আমিও তাদের সাথে কাঁদি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঞা জানান, নিহত খালিদ হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত কয়েকজন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছ।