আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে দারোয়ান নদভী শত শত কোটি টাকা লুটপাট করে খেয়ে ১০০ কোটি টাকার মত ঋণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথায় তুলে দিয়েছে বলে উপরোক্ত কথা গুলো বলেছেন ফাইন্যান্স কমিটির চেয়রম্যান আহসান উল্ল্যাহ।
গতকাল শনিবার (১৫ মার্চ) আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম,নগরীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জনসংযোগ সহকারী পরিচালক মোসতাক খন্দকারের পরিচালনায় ও আইআইইউসি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ফাইনান্স কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসান উল্ল্যাহ’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, আইআইইউসি’র ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী, ভারপ্রাপ্ত ট্রেজারার ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান,চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ, দৈনিক পূর্বকোণের চীফ রিপোর্টার সাংবাদিক মোঃ সাইফুল আলম।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কর্ণফুলী সম্পাদক আফসার উদ্দিন চৌধুরী, আইআইইউসির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্য জাফর সাদেক, রেজিস্ট্রার কর্নেল (অবঃ) মোহাম্মদ কাসেম, প্রফেসর গিয়াস উদ্দিন, ড. রিয়াজ মাহমুদ, ড. সাইফুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম, প্রক্টর মোস্তফা মনির,সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু ও প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দৈনিক ইত্তেফাক সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি মীর মোঃ দিদারুল হোসেন টুটুল প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসান উল্লাহ বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে জাতি ১৬ বছর’র বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছিল তথাকথিত বিনা ভোটের এমপি ফ্যাসিস্টদের দোসর আবু রেজা নদভী।
সে শতশত কোটি টাকা আত্মসাৎ সহ যে ক্ষতি করেছে তার বিচার চাই। কারণ সে সপরিবারে প্রতি মাসে ১৫ লাখ টাকা করে তুলতো। শতশত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। দুইটি লিফট ক্রয় করে ১ কোটি টাকা হজম করে ফেলে। কিন্ত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়ে সেই লিফটের খোঁজ পাইনি। ক্যাম্পাসের গাছ, জমি বিক্রি করে খেয়েছে। আমাদের ক্যাম্পাসের বাহিরে ভাড়া করা ক্যাম্পাস বিল্ডিংটি ছেড়ে দিয়ে এডভান্সের অর্ধ কোটি টাকা হমজ করেছে। ১০০ কোটি টাকার দায় আমাদের মাথার ওপর রেখে গেছে।
ভাইস-চ্যান্সেলর আলী আযাদ বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান বহুলনন্দিত এবং একটি সফল উদ্যোগের নাম, যা জাতির জন্য ব্যাপক কল্যাণ বয়ে এনেছে। উচ্চশিক্ষা গ্রহনে এখন অসংখ্য মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর প্রথম পছন্দ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা প্রদান সারাদেশে একটা বিপ্লব সাধন করেছে।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) এই বিপ্লবের প্রথম সারির অংশীদার। আইআইইউসির মূল লক্ষ্য হচ্ছে জ্ঞানের সঙ্গে নৈতিকতার সমন্বয়ে ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও দেশাত্মবোধ, মানবতাবোধ,সততা, বিজ্ঞানমনস্কতা, দক্ষতা এবং জীবনধর্মিতা সৃষ্টি করা, যাতে ধর্ম ও বিজ্ঞানের আলোকে তারা আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
আইআইইউসি সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে সাফল্যের সাথে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। ১৯৯৫ সালে সামাজিক কল্যাণ ও উন্নয়নে আগ্রহী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী স্বনামধন্য জ্ঞানী-গুণী কিছু ব্যক্তির উদ্যোগে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
কিন্তু এই মহান ব্যক্তিদের সাজানো জ্ঞানের বাগানেও শকুনের নজর পড়ে। লুটেরাদের কবলে পড়ে। সারা দেশের মতো আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে অবরুদ্ধ ছিল। সারা দেশের ব্যাংক,হাসপাতাল, শিল্প প্রতিষ্ঠানের মত এই বিশ্ববিদ্যালয়ও দখলের শিকার হয়।
তিনি বলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের অধীনে ১৪ টি বিভাগে ৩৬৮ জন সার্বক্ষণিক শিক্ষক সহ ৪৮৩ জন শিক্ষক এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রদান করছেন এবং ৮৫ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক রয়েছেন। সমৃদ্ধ অবকাঠামো আইআইইউসির একটি উল্লেখযোগ্য দিক। প্রায় পঞ্চাশ একর জমির উপর নিজস্ব ক্যাম্পাসে সাড়ে ছয় লক্ষের অধিক বর্গফুট জায়গায় ৪২ টি ভবনে আইআইইউসির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট ল্যাব, আনলিমিটেড ইন্টারনেট সুবিধা, ২৩২৯ টি জার্নাল, এক লক্ষ ১৪১ টি বই,৩৫,৫০০ ই-জার্নাল,৪৫ লক্ষ ই-থিসিসে এক্সেস এবং নান্দনিক স্থাপত্য শৈলীর লাইব্রেরি নিয়ে সমৃদ্ধ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি আরো জানান, চীন, নেপাল, শ্রীলংকা, নাইজেরিয়া, সোমালিয়াসহ দেশ-বিদেশের ১১ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। আরো অনেক বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছে। উচ্চশিক্ষায় ইচ্ছুক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এই বিষয় গুলো দেখার জন্য একটা ডেভলপমেন্ট ও স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ডিভিশন নামে আলাদা একটি ডিভিশন রয়েছে। প্রতিবছর দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে প্রায় চার কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা এবং বৃত্তি প্রদান করা হয়।
উচ্চ শিক্ষায় গবেষণাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। গবেষণা কাজকে বিশেষভাবে প্রমোট করার জন্য সেন্টার ফর রিসার্স এন্ড পাবলিকেশন্স (সিআরপি) নামে আলাদা একটি ডিভিশন রয়েছে। যার বাৎসরিক ব্যায় এক কোটি টাকার অধিক। বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের অংশগ্রহণে আমরা সফলভাবে ১৭ টি ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছি।এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমেরিকা, কানাডা, চীন,মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ,থাইল্যান্ড, নেপাল, তুরস্ক, ব্রুনাইসহ বিশ্বের স্বনামধন্য ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক রয়েছে।
WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024
Leave a Reply