প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার নামে ভয়াবহ টর্চার সেল গড়ে তোলা হয়েছিল চট্টগ্রামের মিরশ্বরাই সদরে হোপ মা ও শিশু হাসপাতালে। নিরাপদ শিশু জন্মগ্রহনের নামে হাজার হাজার টাকার প্যাকেজের আওতায় আনতে এখানে রোগীদের বাধ্য করা হতো। শুধু তাই নয়, চিকিৎসার নামে প্রতিপক্ষকে এই বন্দিশালায় আটকে রেখে এক আওয়ামীলীগ নেতা অমানুষিক নির্যাতন চালাতো। ওই আওয়ামীলীগ নেতা হোপ মা ও শিশু হাসপাতালে একটি কক্ষকে টর্চার সেল বানিয়ে বিভিন্ন সময় লোকজনকে ধরে নিয়ে মারধর করতো। কেউ তার ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পেতো না। ৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনে ওই নেতা এখন পলাতক রয়েছেন।
ছবিতে আওয়ামিলীগ নেতা ও ভুক্তভোগী তরুণ
মীরস্বরাই এলাকার বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, হাসপাতালটি শুরুতেই মালিকানা জটিলতা নিয়ে সমস্যা ছিল। ভার্ক নামের একটি এনজিও থেকে চাকুরিচ্যুত হয়ে খালেদা আক্তার নামে এক মহিলা মিরশ্বরাই হোপ মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে মো. জসিমউদ্দিন কে সরিয়ে দিয়ে নিজেই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদটি দখল করে নেন। এসময় খালেদা আক্তার তার স্বামী সীতাকুণ্ডের কথিত সাংবাদিক জহিরুল ইসলামের প্রভাবকে কাজে লাগায়। তৎকালীন সময়ে হাসপাতালটি মানসন্মত সেবা দিয়ে আসছিলো। কিন্তু কথিত সাংবাদিকের প্রবাভে স্ত্রী খালেদা আক্তার জোরপূর্বক হাসপাতালটি দখল নেয়ার পর থেকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযাগ আসতে শুরু করে। হাসপাতালটির বৈধ কোন নিবন্ধন নেই। ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদা আক্তার তাঁর স্বামী কথিত সাংবাদিকের প্রভাব দেখিয়ে স্বাস্থ্য প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
স্হানীয় সাংবাদিকগন জানায়, হাসপাতালটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদা আক্তারের স্বামী জহিরুল ইসলাম সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটানোর জন্য আওয়ামীলীগ নেতা শাখের ইসলাম রাজু ওরফে রাজু কমিশনারকে পরিচালকের পদে স্থলাভুক্ত করেন। এরপর থেকে হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম শুরু হয়। চিকিৎসকের ভুলে কোন শিশু বা প্রসূতি ক্ষতিগ্রস্থ হলে রাজুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো। যার কারণে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করে না।
স্হানীয় সাংবাদিকদের সূত্রে আরো জানা যায়, মিরসরাইয়ে আজিম হোসেন শাহাদাত (২০) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার প্যানেল মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা শাখের ইসলাম রাজু ওরফে রাজু কমিশনারের বিরুদ্ধে। তৎসময়ে মিরসরাই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র রাজু তার লোকজন দিয়ে শাহাদাতকে ধরে নিয়ে যান। এরপর হোপ মা ও শিশু হাসপাতালের ষষ্ঠ তলার একটি কক্ষে আটকে রেখে রাতভর লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে শাহাদাতের মৃত্যু হলে তার বাবা আব্দুল বাতেনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে লাশ বাড়িতে নিয়ে গোপনে দাফন করে ফেলেন। এমন অসেক ঘটনাই ঘটেছিল এই হাসপাতালে।
৫ আগষ্টের পর কথিত সাংবাদিক জহির মীরসরাই এলাকার সাংবাদিকদের সাথে ভাব জমাতে শুরু করে এই টর্সারসেল হোম মা ও শিশু হাসপাতালটি রক্ষা করতে। স্বস্হ্য বিভাগ এই হাসপাতালের মান বিষয়ে একটু কোজকবর নেয়া প্রয়োজন বলে স্হানীয় সাংবাদিকগন দাবী করেন।
WWW.DESHYNEWS24.COM/REGISTRATION NO-52472/2024
Leave a Reply